Bosila , Mohammadpur ,Dhaka | HOTLINE: 09678221410

খেলায় খেলায় শেখা! জেনে নিন, শিশুর শিক্ষায় খেলা ও খেলনার গুরুত্ব ঠিক কতখানি?

খেলায় খেলায় শেখা! জেনে নিন, শিশুর শিক্ষায় খেলা ও খেলনার গুরুত্ব ঠিক কতখানি?

 

 

 

খেলায় খেলায় শেখা! জেনে নিন, শিশুর শিক্ষায় খেলা ও খেলনার গুরুত্ব ঠিক কতখানি?

সবে সোজা হয়ে বসতে শিখেছে গুড়গুড়ে বাচ্চাটি। চারদিকে বালিশের সাপোর্ট দিয়ে, অনেকগুলো খেলনা সাজিয়ে ছোট্টটাকে বসিয়ে দেয় মা। অমনি কী আনন্দ তার! কথা বলা পুতুল, হাততালি দেওয়া বানরছানা, কুতকুতে চোখের ইয়াব্বড় এক টেডি বিয়ার, সুর করে ছুটে চলা রিমোট কন্ট্রোল গাড়ি, কী নেই খুদেটার খেলনার রাজত্বে? (Benefits of Educational Toys and Play)

মাসি-পিসি-কাকু-দিদা যে যখনই আসে, হাতে করে নতুন নতুন খেলনা আনতে ভোলে না। খেলনার সংখ্যা একটু একটু করে বাড়ে, আর বাচ্চাটির মনে বাড়তে থাকে নেড়ে-ঘেঁটে-ভেঙে (Shishu Shikkha) দেখার কৌতূহল!

সত্যি, যে বাড়িতে বাচ্চা আছে, সেই বাড়িতে খেলনা নেই এমনটা কোনও দিন হতে পারে না। হতে পারে খেলনার রকমসকম, দাম, নাম এবং বিশেষত্ব আলাদা আলাদা, কিন্তু তার পরিচয় একটাই, সে শিশুমনের সবথেকে প্রিয় সঙ্গী।

বলুন তো, আপনার কাছে খেলনার গুরুত্ব কী? খেলনা কি শুধুই একরত্তিগুলোর একচেটিয়া উপহার বা বাচ্চাকে ব্যস্ত রাখার একটা কৌশলমাত্র? নাকি বাচ্চা সামলে রান্নাঘরে কাজ গোটানোর একমাত্র হাতিয়ার?

বিশেষজ্ঞদের দাবি কিন্তু অনেকটাই অন্যরকম। বাচ্চা ভোলানো খেলনাই কিন্তু শিশু-শিক্ষার ভিত তৈরি করে। (Educational Toys for Kids) বাচ্চার মেধা এবং মনন প্রখর করতে সাহায্য করে। বাচ্চার সামগ্রিক বিকাশ এই খেলনা ছাড়া সম্পূর্ণ হয় না কিছুতেই।

বাচ্চার জন্য খেলনা নেওয়ার আগে, একটু যাচাই করে এবং মাথা খাটিয়ে খেলনা কিনলে, শিশু সত্যিই খেলতে খেলতে জ্ঞান অর্জন করে, বাইরের পরিবেশের সাথে লড়াই করতে প্রস্তুত হয়ে যায় এবং তার বিচারবুদ্ধিরও বিকাশ ঘটে। বাচ্চার শিক্ষায় তাই খেলনা বড্ড গুরুত্বপূর্ণ। (How Do Educational Toys Benefit A Child?) খেলনা নিয়ে খেলতে খেলতে কীভাবে বুদ্ধির বিকাশ ঘটে শিশুর, কীভাবেই বা তৈরি হয় আগামীর বোধশক্তি, দেখে নিন একনজরে।





খেলনা নিয়ে খেলার গুরুত্ব
(Educational Benefits of Children’s Toys)

একদম বাচ্চা বয়স থেকেই নানা ধরনের খেলনা শিশুমনে আগ্রহ এবং কৌতূহলের সৃষ্টি করে। নতুন নতুন জিনিস নেড়ে ঘেঁটে দেখার আনন্দই যে আলাদা একটা বাচ্চার কাছে। (Why are Toys Important in Childhood Development?) তাই শুধু সময় কাটানো বা আনন্দ দেওয়া নয়, বাচ্চার প্রথম শিক্ষার পাঠ শুরু করে এই রংবাহারি খেলনারাই। সহজ করে বোঝানোর চেষ্টা করলাম কয়েকটা পয়েন্টের মাধ্যমে।

#1. শিশুর কল্পনাশক্তি বাড়ায়: ছোট্ট ছোট্ট রঙিন ব্লক বা পাজল জাতীয় খেলনা দিয়ে, শিশু মনের মাধুরী মিশিয়ে বাচ্চা কিছু অর্থপূর্ণ বানাতে চেষ্টা করে। যাই বানাক সে, তার মধ্যেই থাকে রং মেলানোর চিন্তা-ভাবনা বা গঠনমূলক কল্পনাশক্তি। নিজের কল্পনা এবং সৃজনশীলতা কাজে লাগিয়ে সে তৈরি করে নানা ধরনের আকার, চেষ্টা করে বাড়ি, গাড়ি বা নতুন খেলনা বানানোর। আর এই চেষ্টার মধ্যে দিয়েই বাড়তে থাকে বাচ্চার বোধ-বুদ্ধি ও কল্পনাশক্তি।



#2. বাস্তব জীবনের নিয়ম-কানুনে সড়গড় করে তোলে: একটা পুতুলকে খাইয়ে দেওয়া বা তার সাথে কথা বলা, বা ধরুন খেলনা খুন্তি কড়াই নিয়ে রান্না করা। (Types of Educational Toys) এই ধরনের বাস্তববোধ গড়ে ওঠে খেলনা নিয়ে খেলতে খেলতেই। বাচ্চার মা যেভাবে তাকে খাওয়ায় বা সাজায়, রান্না করে, বাজার করে, বাচ্চা সেই কাজগুলো খেলনা পুতুলের ওপর প্রয়োগ করে, তার সাথে কথা বলে আগডুম-বাগডুম। যত্ন-আত্তি বোধ, সাবলীলভাবে বাক্য গঠন বা পুতুলকে জীবনের পাঠ দিতে গিয়ে নিজেই বড্ড বুঝদার হয়ে ওঠে খুদেটা।



#3. শিশুকে সামাজিক করে তোলে:বাচ্চা যদি মা-বাবার সাথে বা ভাইবোনের সাথে খেলনা নিয়ে খেলে, তা হলে সে হিংসে শেখে না। নিজের জিনিস ভাগ করে নিতে শেখে সে খেলনা ভাগের মাধ্যমেই। তাতে সে গাড়িই চালাক আর পুতুল নাচাক, সবার সাথে খেললে বাচ্চা সামাজিক ও মিশুকে হয়। মন খুলে আনন্দ করতে শেখে (Toys for Child Development Stages)।



#4. বাচ্চার মোটর স্কিল উন্নত হয়: ছোট্ট ছোট্ট হাত, পা আর চোখ একসাথে কাজে লাগিয়ে খেলতে খেলতে উন্নত হয় শিশুর মোটর স্কিল। যেমন ধরুন, বাচ্চা নানা আকারের ব্লক দিয়ে একটা লম্বা টাওয়ার বানাচ্ছে। দুবার, তিনবার সব ভেঙে ভেঙে পড়ে গেল। তারপরে কিন্তু বাচ্চা নিজেই বুঝে নেবে কীভাবে সাজালে আর কার ওপর কাকে চাপালে তার টাওয়ার দাঁড়িয়ে থাকবে। আবার ধরুন, রিমোট ওয়ালা গাড়ি চালাতে গিয়ে ডানদিক, বাঁদিকের হিসেব, কোথায় গেলে গাড়ি ধাক্কা খাবে না বা উল্টে যাবে না; এসবকিছু বুঝে যায় বাচ্চাটি। (Benefits of Toys in Child Development) খেলতে খেলতেই জন্ম নেয় ডিসিশন মেকিং পাওয়ার বা অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা।
#5. ধৈর্য এবং আগ্রহ বাড়ায়: একরত্তির মাথায় সারাক্ষণ ঘুরছে দুষ্টুবুদ্ধি। কী ফেলবো, কী ভাঙবো, কী ছড়াবো; এই চলে তার মাথায়। এক্ষেত্রে বাচ্চার ধৈর্য বাড়াতে বা মন শান্ত করতে কাজে আসতে পারে মিউজিক্যাল খেলনা। ছোট্ট একটা পিয়ানো নিয়ে হয়তো টুং-টাং করে সুর বাঁধতে বসবে আপনার ওস্তাদ ছানা।



#6. প্রবলেম সল্ভিং স্কিল উন্নত হয়: বাড়ন্ত বাচ্চাদের মধ্যে বা যারা প্রি স্কুলারস তাদের জন্য এই প্রবলেম সল্ভিং খেলনা কিন্তু পারফেক্ট। (Benefits of Educational Toys) এই বয়সের বাচ্চাদের জন্য বিভিন্ন শিক্ষামূলক খেলনা বা এডুকেশনাল টয় পাওয়া যায়, যেগুলো পড়াশোনার প্রাথমিক পাঠে ভীষণ সাহায্য করে। আর দুরন্ত বাচ্চার মধ্যে পড়াশোনা নিয়ে আগ্রহ তৈরিতে তো এইসব খেলনার জুড়ি নেই। নাম্বার ম্যাচিং খেলনা, সেপ বিল্ডিং ব্লকস বা নানারকম পাজল, বাড়ন্ত বাচ্চাদের মধ্যে পড়াশোনার আগ্রহ জাগিয়ে তোলে। (Shishu Shikkha) রং মিলিয়ে, ছবি সাজাতে গিয়ে নীরস যোগ-বিয়োগের খেলাও বড্ড মজাদার হয়ে ওঠে।